Saturday, March 13, 2010

দিনের শেষে ঘুমের দেশে .......................

গ্যাস ওভেন এর নব চেক কোরে , কিচেন এর চার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে , বাইরে এসে রান্না ঘরের দরজা টা টেনে দেয় অনু । যাক আজকের মতো ছুটি । বাকি রাত টা এখন শুধু অনুর ।  শোবার ঘরে এসে ফুল স্পীডে ফ্যান টা চালিয়ে দেয় অনু । অনুসূয়া । এই নামে এখন কেউ ডাকেনা । যারা ডাকতো তারা এখোন কোথায় ! কলেজ ছাড়ার পর প্রথম , প্রথম যোগাযোগ ছিলো , তারপর যা হ্য় আস্তে আস্তে সব যোগাযোগ হারিয়ে গেছে ।
          আয়্নার সামনে দাড়াঁয় অনু । ক্লান্ত দেখাচ্ছে , চোখেমুখে জল দেয় তারপর আস্তে আস্তে মুখে ক্রীম মাখে  । পরম মমতায় । এরপর তো শোবার পালা । একা ই শোয় অনু , বহু বছর ধরে , স্বামী পাশের ঘরে । এক ই ছাদের নীচে দুজনের  সঙ্সার , কিন্তু যেনো পরসপরের অচেনা । ছেলে চলে গেছে দুর শহরে চাকরি নিয়ে । যতদিন ছেলেটা ছিলো অনু র জীবন টা এতো ধূ- ধূ করতো না ।     স্বামীর সাথে চিরদিন ই দুরত্ব ছিলো , হয়তো বয়সের কারনে , দিন দিন এই দুরত্ব বেড়েই গেছে .................অনু চেস্টা করতো প্রথম দিকে , পারেনি  অবশেষে ফিরে এসেছে নিজের কাছে । নিজের একটা জগত তৈরি হয়ে গেছে যেন কবে । দিন কেটে যায় গতানুগতিক ভাবে , কিন্তূ ইদানিঙ রাত বড় যন্ত্রনাময় হয়ে উঠেছে , ঘুম যা নিয়ে যায় শান্তির দেশে তা অনু কে ছেড়ে গেছে । অন্ধকার ঘরে বিছানায় এপাশ , ওপাশ করে , ছটফট করে অনু , নিষ্ঠুর ঘুম তাও ওকে দয়া করে না। চোখ বুজে মনে মনে যেনো ঘুমের কাছে ই নতজানু হয় অনু , একবার টি , একবার টি আমায় দয়া করো । মাথা র ভেতর দপ দপ করতে থাকে অনুর । এমন সময় কে যেন হাত রাখে অনু র কপালে , আঃ কি ঠান্ডা , কি শান্তি ....অনু আরামে চোখ বোজে .................মুহুর্তে সে কপাল থেকে হাত তুলে চলে যায় । আধো ঘুমে অনু আর্তি জানায় " কোথায় গেলে ? "  দুর থেকে কে যেন বলে ওঠে " আসছি । তোমার জন্য সুন্দর সব স্বপ্ন সাজিয়ে আনছি যে " । মাথা ঝিম ঝিম করে অনুর । শরীর টা যেনো ভাসছে , বিড়বিড় কোরে অনু বলে ওঠে " চাই না , চাই না  কিছ্হু চাই না ...........শুধু তুমি এস " । শরীর টা যেন হালকা হোয়ে যাছ্হে , অনুর চেতনা য় কোথায় যেনো দূর থেকে একটা কুকুর ডেকে ওঠে , রাত পাহাড়াদারের আবছা হুইসিলের শব্দ দূর দিগন্তে মিলিয়ে যেতে থাকে । নরম আলোর মতো খুব মিহি সুরে র একটা গুনগুনানি সারা ঘরে ধূপের ধূয়া মতো ছড়িয়ে পড়ে .............আয় ঘুম ..........আয় ঘুম । চেতনার শেষ সীমানায় পৌছে অনু ঠিক বুঝতে পারে , আসছে  ঘুম আসছে । ওই গলির মোড়ের পানের দোকান পেরিয়ে সোজা রাস্তা ধরে বাড়ী খুঁজে খুঁজে ঠিক অনুর বাড়ীর এসে গেছে সে । পাওয়া না পাওয়া , ভালো লাগা , মন্দ লাগা মন ও শরীর টাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ঘুমের অতল খাদে । আঃ , কি শান্তি । অনু জানতেও পারে না তার ঘুমন্ত মুখে ছড়িয়ে পড়েছে এক অনাবিল প্রশান্তির ছায়া । 

Tuesday, February 23, 2010

ফেরা

কত দিন পর এলাম । মনে হছে যেনো দূর প্রবাস থেকে বাড়ী ফিরলাম । বাড়ীর চারপাশে আগাছা , ঘরের ভেতর ধুলো , মাকরসার জাল । ভ্যাপসা গন্ধ , যেনো বাড়ী টা আমার ওপর অভিমান করে আছে ।  ওর অভিমান দূর করতে হবে । বোঝাতে হবে যত দূরেই যাই না কেনো , ওর কাছেই ফিরতে হবে  । ঝাড় পোছ কোরতে হবে । আবার ফিরিযে আনব আগের চেহারা ।  ......................
শীত আস্তে আস্তে বিদায় নিচ্ছে । জীর্নতা , শুশ্কতা মুছে ফেলে প্রকৃতি আবার সেজে উঠছে নবরূপে । খুব ভালো লাগে আমার এই সময় টা । বসন্ত কাল , মধুমাস । প্রকৃতি একটুকুও কার্পন্য করে না , ঋতুরাজ কে স্বাগত জানাতে ।এ সময় ভীষন ইচ্ছে করে সবাইকে ভলোবসতে । সবাই কে সুন্দর দেখতে । নিজের দিকে তাকিয়ে দেখি কতদিন নিজেকে ভলোবসিনি , সাজাইনি । এক জনাকীর্ন , ব্যস্ত পথ দিয়ে শুধুই   হেঁটে গেছি । আর নয় । এবার আমি ফিরেছি । ঘরে ফিরেছি । 
               আগে ঘর গোছাই । আস্তে ,আস্তে ঘরের লাবন্য ফিরে আসে । এবার বসি আয়্নার সামনে । আয়্না র মাঝখান থেকে সে অভিমানী চোখে তাকায় , ফিসফিস কোরে বলে " কেনো? কেনো আমায় এতোদিন ভালোবাসোনি? আদর করোনি? খারাপ , খারপ তুমি খুব খারপ । " ফোঁপাতে থাকে সে । আস্তে ,আস্তে তার মুখে হাত বোলাই , পরিপাটি কোরে চুল আচঁরে দেই । রূপটানে , প্রসাধনে উজ্জল হোযে ওঠে তার মুখশ্রী । কাজল মাখা মায়াবী দুটো চোখ মেলে সে আমার পানে তাকায় । আমি তার চোখের ভাষা পড়তে পারি । ভরসা চাইছে , আমি ভরসা দেই ..." না , আর কখন ও চলে যাবো না " । পরম নির্ভরতায় সে চোখ বোজে । আমি জেগে থাকি । জানি মিথ্যে কথা , আমাকে আবার চোলে যেতে হবে, আমি না চাইলেও যেতে হবে ।  আবার সেই ছুটে চলা , সেই ব্যস্ত , ধুলোময় পথ .................বিষাক্ত বাতাস কেটে চলা , দম বন্ধ হোয়ে আসবে , তবু ও চলতে হবে । তারপর ক্লান্ত হোয়ে আবার ফিরব তোমার কাছে , আবার চলে যাব , এরকম বারবার .............কতবার যে এমন রক্তাক্ত ভাবে ফিরব । 
  জানি একসময় এই আসা যাওয়া থেমে যাবে । আমি তাকিয়ে আছি সেই সময় এর পানে । শেষবারের মতো ঘরে ফিরব । শরীর এলিয়ে দেবো ঘরের দাওয়ায় । ফুলের গন্ধ মাখা বাতাস জুড়িয়ে দেবে আমার এই ক্লান্ত শরীর কে । আহা  কবে আসবে সেই মাহেন্দ্র যোগ । আমার শরীর চলছে , কিন্তু মন তাকিয়ে আছে সেই লগ্নের দিকে । আসব .................আসব ...............ফিরে আসব । 

Sunday, December 27, 2009

চির সখা হে ...........

ভারতীয় বিশেষ ত বান্ঙালী মেয়ে দের স্বামী রা কখোনো স্ত্রী র বন্ধু হোয়ে উঠ্তে পারেন না । বলা ভালো হোতে চান না । স্ত্রী র মতো অধস্তন এর বন্ধু? পৌরুষে লাগ বে না? বৌ তো কেবল দাসী হোতে পারে । না সব পুরুষ এমোন ভাবেন তা বল ছি না , তবে বেশীর ভাগ স্বামী এমন টি ই ভেবে থাকেন । কেনো ?? সম্পুর্ন অচেনা এক টি মেয়ে সব ছেড়ে এসে স্বামী ও তার পরিবার কে আপন কোরে নেয় । জীবনের শেষ দিন অবধি তার পাশে থাকে । সেই জন্য ই বোধ হয় মেয়ে টি কোনো মুল্য পায় না । ঘরের ই তো বৌ  ...........তার কোনো মন , ইচ্ছা , অধিকার থাক তে নেই । শুধু মেনে নেওয়া , মানিয়ে নেওয়া । দ্রৌপদী ভালোবেসেছিলো অর্জুন কে , কিন্তূ তাকে বাধ্য করা হোলো   পঞ্চপান্ডব কে বিবাহ কোরতে .......তার মনের খবর কেউ রাখেনি । দ্রৌপদির পাঁচ স্বামী র কেউ ই তার বন্ধু হয় নি । তাকে ভালোবাসেনি । শুধু তাকে ব্যবহার কোরেছে ।  এই পাঁচ স্বামী র সামনেই দ্রৌপদী কে চরম অপমান কোরেছে কৌরবেরা । এক জন ও আসেনি তাকে উদ্ধার কোরতে । এসেছিলো এক্জন ...তার সখা , স্বামী নয় । তিনি শ্রীকৃষ্ঞ । মধূসুসদন । রবীন্দ্রনাথের বৌঠান ........কত গুনী, বিদুষী , সুন্দরী ...তিনি ও স্বামীর সান্নিধ্য পেলেন না । ওতো বড় প্রাসাদে তার এক মাত্র সাথী ও বন্ধু ছিলো রবি । কেনো এমন হয় ? স্ত্রী বলেই কি জ্যোতিরিন্দ্রনথের কাছে কাদম্বিনীর কোনো গুরুত্ব ছিলো না । কাদম্বিনী যদি পরস্ত্রী হোতেন ?    তবে দিন বদলাচ্ছে । এই প্রজন্ম অন্য রকম ভাবে বেড়ে উঠেছে । ছেলেমেয়েরা একসাথে পড়াশুনা , কাজকর্ম কোরছে , পরস্পরের মধ্যে বিভেদ কমে আসছে । তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব জন্মাচ্ছে , এটা খুব ই ভালো । আশা করা যায় শুধু স্বামী -স্ত্রী নয় পরস্পর কে বন্ধু হিসেবে তারা দেখবে । প্রশ্ন উঠবে এখোন তাহলে এতো ঘর ভাঙছে কেনো? কারন মেয়ে রা আর পাপোশ হয়ে থাকতে চাইছে না ।  আগে ঘর টিকিয়ে রাখতে কত মেয়ে র চোখের জল , তাদের স্বার্থত্যাগ এর কথা কে মনে রেখেছে? কি দাম পেয়েছে তারা ? 

Sunday, November 15, 2009

আমার মনে হয যে

যদি কোনো মন্ত্রবলে  তিরিশ বছর পিছিয়ে যেতে পার তাম । এক্দম অন্যরকম কোরে সাজাতাম আমার সব কিছু । স........ব ।   সবাই বোধ্হোয় তাই ভাবে । কিন্তু এখন আমি যেমন আমার ভুল ত্রুটি গুলো দেখ তে পার ছি , তখন কি সেটা বুঝ্তে পার তাম ? সেই এক ই ভুল কোর তাম । তাই যদি এমন হয় যে বয়্স কম বে , কিন্তু এতো বছরের অভিগ্গতা টা থেকে যাবে । ইস্ তাহলে জীবন টাকে মনের মতো গোছতাম ।  কি রকম্? এক ;আরো পরাশুনা কোর্তাম । আরো মন দিয়ে , সিরিয়াস লি  কোর্তাম । পড়াশুনা য় আমি তো খারাপ ছিলাম না । কিন্তু সেভাবে গুরুত্ত  দিয়ে পোড় লাম না । তবু কত ভালো নম্বর পেতাম । কেনো যে তখন বুঝ লাম না , এ পথ আমাকে কত দুর    পউছে দেবে । এটা ই আমার জীবনের সব চেয়ে ব্ড় ভুল। দুই ; আমার গানের গলা ভালো ছিলো ।   গানের মাস্টার মশাই কত  প্রশ্ংসা  কোর তেন আমার গলার .........বোল তেন এতো মিস্টি গলা !  তোর হবে । কত তড়াতাড়ি আমি সুর তুলে নিতে পার তাম , গানের ক্লাশে কেউ সেটা পার তো না । কিন্তু হায় ভগবান্! আমি চর্চা কোর লাম না ।  আমার জীবনের আশ্রয় হোতে পার তো সুর , আমি তখন বুঝ তেই পার লাম না । ঈশ্হর আমায় কখোনো  মাফ কোর বেন না । আবার যদি সেই দিন ফিরে পেতাম তবে গান কে আক ড়ে ধোর তাম ।

আমার মনে হয় যে

আমার জীবনের সব চেয়ে বড় ভুল আমি নিজের পাযে দাড়ানোর কোনো চেস্টা ই করিনি । বোকার মতো বড় বড় স্বপ্ন ই দেখেছি , নিজেকে মোটিভেট কোরিনি ।  বুঝ তে  ই পারিনি যে ,যে কোনো মানুষ এর এটা ই প্রধান চেস্টা হওয়া উচিত ।  বিশেষ কোরে মেয়েদের । স্বনির্ভরতা মানুষ কে আত্মবিশ্বাস জোগায় । তার ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলে ।  এই দুটোর কোনো টাই আমার নেই । এখন আর ভেবে কোনো লাভ নেই ।

Friday, October 30, 2009

টুকিটাকি

কত কথা ই যে লিখ্তে  চাই । কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক শব্দ খুজে পাইনা । সব কথারা মনের ভেতর কল কল কর তে থাকে , কিন্তু বেরোনের পথ খুজে পায় না
যেমন এখন । বুকের মধ্যে এলোমেলো কথারা ছেড়া,ছেড়া মেঘের মতো ভেসে বেরাচ্চে ।   উত্সব এর মর সুম শেষ । পাতা ঝরার দিন শুরু হোলো   । সবুজ মুছে যাচ্চে , বিবর্ন ...ধুসর হোয়ে উঠ চ্ছে চারিদিক । ভালো লাগেনা , এক্দম ভালো লাগেনা । আমার  বাড়ী টা যেনো " ইগ লু "  । বরফের তৈরি এক গুহা । বাড়ী র  মানুষটা র মধ্যে বরফ কঠিন শৈত্য । সঝ্য কোর তে , কোর্তে আমি ও যেনো  নিঃসার হোয়ে গেচি ।  তবু সমস্ত শক্তি দিয়ে আমি নিজেকে ঝাকুনি দেই । তার জন্য আমি নিজেকে বের কোরে আনি ঐ তুষার গুহা থেকে ,  তাকিয়ে থাকি আবার কখন সব সবুজে ভরে উঠ বে । আমি শিখে গেছি কিভাবে একা ,একা  বাঁচ তে হয় , জেনে গেছি শীতের পর আসে বসন্ত , মেঘের পরে হেসে ওঠে রোদ .........কাটিয়ে তো দিলাম ,কেটে যাবে  এভাবে ...........